যারা মাংস খায় না, বিশেষত যারা একেবারেই নিরামিষাশী বা নিরামিষভোজী তাদের হাঁড় দুর্বল হয় এবং ভেঙ্গে যাওয়ার প্রবনতা বেশি থাকে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, তুলনামূলক ভাবে নিরামিষাশীদের দেহের কোনও একটি হাঁড়ে ভেঙ্গে যাওয়া বা তাতে চিড় দেখা দেওয়ার সম্ভবানা প্রায় ৪৩ শতাংশ বেশি।
এ বিষয়ে গবেষক টামি টং বলেন, ‘সমীক্ষায় আমরা দেখতে পেয়েছি যারা মাংস খায় তাদের তুলনায় যারা পুরোপুরি নিরামিষভোজী তাদের হার ভাঙ্গার প্রবনতা বেশি। ১০ বছরের অধিক সময়কাল ধরে পরিচালিত সমীক্ষায় অংশ নেয়া প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে প্রায় ২০ জন বেশি নিরামিষভোজীর হাড় ভাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। কোমড়ের হার ভাঙ্গার ক্ষেত্রে এ হার আরও বেশি।’
সমীক্ষায় অংশ নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৩০ হাজার ব্যক্তি মাংস গ্রহণ করেন। ৮ হাজার জন মাংস না খেলেও মাছ খেয়ে থাকেন। ১৫ হাজার জন পুরোপুরি নিরামিষাশী এবং আরও ২ হাজার জন গবেষণার শুরুতে নিরামিষাশী ছিলেন। প্রায় ১৮ বছর ধরে চলা সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩ হাজার ৯৪১টি হাড় ভাঙ্গা বা হাড়ে ফাঁটলের ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে বেশির ভাগ লোক কোমড়ের হাড়ে আঘাত পেয়েছেন। এতে দেখা যায় শুধু কোমরের হাড়ে ফাঁটলের ক্ষেত্রে যারা মাংস খায় তাদের তুলনায় যারা শুধু মাছ খান কিন্তু মাংস খান না এমন লোকেদের সংখ্যাও গড় হিসেবে বেশি।
কেন এমনটা হয় এমন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ফ্লোরিডার নিউট্রিশনস এণ্ড ডায়েটিকস এর সহকারী অধ্যাপক লরি ওয়াই রাইট। তিনি বলেন, ‘একজন নিরামিষাশী ব্যক্তি হয়তো পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ করছেন। কিন্তু অধিকাংশ উদ্ভিদ নির্ভর ক্যালসিয়াম প্রাকৃতিক ভাবে উপলব্ধ নয়। আবার পালং শাক খাওয়ার মাধ্যমে হয়তো প্রয়োজনীয় আমিষ আপনি পেতে পারেন। কিন্তু মাংসে উপলব্ধ আমিষের সাথে এর অ্যামিনো এসিডের মাত্রায় ব্যাপক তফাৎ রয়েছে।’
গবেষকদের মতে, হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখতে আমিষভোজীদের তাই প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে। আশার কথা হলো বাজারে প্রাণিজ আমিষের অনুরূপ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট উপলব্ধ।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন
টাইমস/এনজে/এসএন